Sunday, August 18, 2013

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সারা দিন ।

come to mukthi and learn the truthপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সারা দিন। 
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে শেখ হাসিনার সতর্কবানী
জনগণের জন্য খুলে গেল রাজধানীতে নির্মিত এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় উড়াল সেতু ‘কুড়িল ফ্লাইওভার’। তিন কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ এই ফ্লাইওভারটি উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বলেছিলেন, ‘আজ আমরা যে পরিকল্পনাগুলো হাতে নিয়েছি সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।’ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার কাজে আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা করুন।" তিনি যথার্থই বলেছিলেন ‘আমরা ক্ষমতায় থেকেও অনেকগুলো নির্বাচনে হেরে গেছি। জনগণ ভোটের মালিক, তারা ভোট দেবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে, আমরা তাকেই মেনে নেব। তবে সৎ ব্যক্তিকে রেখে সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের বেছে নিলে আমাদের কিছুই বলার নেই। জনগণকে আমি সতর্ক করে বলতে চাই, তারা যেন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও যারা দেশের উন্নয়ন করে- তাদেরকে যেন ভোট দেয়। ভোট তাদের আমানত, এটা যেন অপাঙ্ক্তেয়দের দান করে খিয়ানত না করেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি না বাংলাদেশের জনগণ আবার কি সেই অন্ধকারের যুগে ফিরে যেতে চায়। জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, কালো টাকা, দুর্নীতি- সেখানেই ফিরে যেতে চায়। সেই অন্ধকারের যুগেই আমরা কি ফিরে যাব? নাকি আলোকিত পথে আমরা এগিয়ে যাব? আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি।’ বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বেগম সাহেবাকে জননেত্রী বলেছিলেন "তিনি নাকি নতুনভাবে দেশ পরিচালনা করবেন। অর্থাৎ নতুনভাবে দুর্নীতি করার নতুন কোন পদ্ধতি তিনি আবিষ্কার করেছেন।’ ৩ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজধানী এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করল।দেশের অগ্রগতি তাদের মূলকথা ছিল না। মূলকথা ছিল কী ভাবে টাকা বানানো যায়। কিভাবে আরো একটি হাওয়া ভবন তৈরী করে জনগণের অর্থ সম্পদ লুণ্ঠন করা যায়- সে প্রয়োজনেই খালেদা জিয়ার ক্ষমতায় আসার প্রয়োজন ছিল। শেখ হাসিনা আরো বলেছিলেন "একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে যদি তিনি কালো টাকা বানান, দুর্নীতি করেন আর জরিমানা দিয়ে তাঁকে শোধ করতে হয়, তাহলে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দুর্নীতি কোন পর্যায়ে ছিল তা জনগণকে বিবেচনা করার অনুরোধ করব। একইসঙ্গে বর্তমান সরকারের সঙ্গে বিগত জোট সরকারের শাসনামলকেও তুলনা করে দেখতে বলব। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আগের সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, "একটি সরকার দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হলে সামনে এগোতে পারে না।  
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও মানুষের মাথাপিছু আয় ও রিজার্ভ বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় এখন বিদেশে গিয়ে মানুষ চাকরি করতে পারছে। আওয়ামী লীগ সরকার রাজধানীর উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে এবং কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনার (এসটিপি) আওতায় আধুনিক ঢাকা গড়তে বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে মিরপুর-বিমানবন্দর ফ্লাইওভার, বনানী রেললাইনে ওভারপাস এবং সংযোগ-সড়ক চালু এবং হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি বলেন, কুড়িল ফ্লাইওভার ঢাকার গেটওয়ে এবং আধুনিক পূর্বাচল সিটির এন্ট্রি পয়েন্ট হবে। এতে পূর্বাচলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়ে যানজট কমবে এবং অর্থনৈতিক খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।শেখ হাসিনা বলেন, যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। এছাড়া ২৬ কিলোমিটার ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজও পূর্ণোদ্যমে চলছে। শান্তিনগর থেকে ঢাকা-মাওয়া সড়কে ঝিলমিল পর্যন্ত আর একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।
কুড়ীল ফ্লাইওভার ব্যবহার করে উত্তরা ও বনানী থেকে সহজেই প্রগতি সরণি হয়ে রামপুরার দিকে যাওয়া যাবে। এর ফলে কুড়িল বিশ্বরোড ক্রসিং এলাকার যানজট অনেকটা দূর হবে বলে এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার গঠনের পর এমন কোন খাত নেই- যেখানে উন্নয়ন হয়নি। এরই অংশ কুড়িল ফ্লাইওভার। দেশের প্রতি কর্তব্যবোধ ছিল বলেই এই সেতুর কাজ দ্রুত শেষ হয়েছে। জোট সরকারের আমলে দুর্নীতিকে তারা ‘নীতি হিসেবে’ গ্রহণ করেছিল বলেই উন্নয়নমূলক কোন কাজ সামনে এগোয়নি। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছিল জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির দেশ। পাঁচবার দুর্নীতিতে দেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে। বিগত জোট সরকারের দুর্নীতি-দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরতে গেলেই "খাম্বা লিমিটেড ও ড্যান্ডি ডায়িংয়ের" নামে সোনালী, জনতা এবং বিভিন্ন বেসরকারী ব্যাংক থেকে বি এন পি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুই পুত্র, ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা ৯৮০ কোটি টাকার মতো লুটপাট করে নিয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে সুদসহ মওকুফ করিয়েছে।
অপর দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই মেট্রোরেল প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে এবং এর কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। বর্তমান সরকারের মেয়াদেই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে এবং ইনশাহ আল্লাহ্‌ শেষও হবে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছে। যার সব টুকুন প্রশংসার দাবীদার আওয়ামী লীগ সরকার তথা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। দারিদ্র্যতার "অভিশাপ" থেকে বাঙ্গালী জাতিকে মুক্তি দিয়ে একটি সুখি সম্রিদ্ধাশালী দেশ হিসেবে অনতিবিলম্ভেই বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সারিতে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে জনগণের ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে ধর্ম প্রতিষ্ঠার অযৌক্তিক সাম্প্রদায়িক বিশ বপনে বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়। আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের সংগঠন। কেবল এই দল ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। জনগণ দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কখনও কোন নীলনকশা মেনে নেয়নি। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকানড, পবিত্র কোরান শরীফ ও জায়নামাজে অগ্নিসংযোগ, মসজিদ জ্বালিয়ে দেয়া বা নারীদের সম্পর্কে কোন ভুল ব্যাখ্যা বা আপত্তিকর মন্তব্য মেনে নেয়নি। বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতের অপপ্রচার এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের হাত থেকে দেশ রক্ষা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে । ঢাকা মহানগরীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষা এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি আধুনিক শহর গড়তে সরকারের প্রচেষ্টায় সকলকে এগিয়ে আসা উচিত।

Saturday, August 17, 2013

১৫ আগস্টের কালো অধ্যায় বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


১৫ আগস্টের কালো অধ্যায় বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনার মা-বাবা, ভাই-বোন ও আমার পিতার হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আপস হবে না: সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানতে না পেরেই ১৫ অগাস্ট তাকে হত্যা করে পরাজিত শক্তি। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে জাতির পিতার নির্মমভাবে নিহত হওয়ার বিভীষিকাময় ১৫ আগস্টের সেই কালরাত্রির স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালির মহান ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সোনালী অধ্যায়ের ওপর কালিমা লেপন করেছে।শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের কালো অধ্যায় বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে। কেননা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অনেক ত্যাগের মাধ্যমে এ জাতির জন্ম হয়। শোকাবহ ১৫ আগস্টে জন্মদিন উদযাপন করায় বেগম জিয়ার তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই বিয়োগান্ত দিনে জন্মদিন উদযাপন করে তিনি আমাদের বুঝিয়ে দিলেন তিনি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সঙ্গে রয়েছেন।শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার এই বর্বরোচিত দিনে জন্মদিন উদযাপন করে বেগম জিয়া আমাদেরকে বুঝিয়ে দিলেন যে তিনি দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না এবং তিনি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির একজন দোসর। বিএনপি-জামাত আবার ক্ষমতায় আসলে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে তা একবার ভেবে দেখতে শেখ হাসিনা জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।তিনি বলেন, আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসলে দারিদ্রতা বেড়ে যাবে, সাক্ষরতার হার কমে যাবে, বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পাবে, খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা দেশ শাসন করবে।তিনি বলেন, আমাদের মেয়াদকালে ব্যাপক উন্নয়নের পরও কিছু লোক আমাদের সমালোচনা করছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় না আসে দেশের পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে তা একবার ভেবে দেখতে আমি তাদের আহ্বান জানাচ্ছি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের উভয় মেয়াদেই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। অপরদিকে বিএনপির শাসনামলে জাতি পিছিয়ে গেছে। সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশ কুখ্যাতি অর্জন করেছে।শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দেশ শাসন করেছে। এর ফলে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রায় ৯৬ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বর্তমান মেয়াদে প্রতিটি খাতে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।তিনি বলেন, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিল। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দেশ আবার খাদ্য সংকটে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। এ ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, 'যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং যারা চায় বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক তাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, "আসুন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে, মানুষ হত্যা করে, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলি।"১৯৭৫ পরবর্তী এবং জিয়ার শাসনকালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পটপরিবর্তনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাসিত জীবন থেকে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর জিয়া তাকে ও রেহানাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে প্রবেশ করতে দেননি। 'এমনকি ওই ভবনে মিলাদ মাহফিল আয়োজন করতে দেননি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তালাবদ্ধ ওই কক্ষের বাইরে আমরা বাবা-মা'র জন্য দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার ঠেকাতে জিয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাস করেন। বেগম জিয়া খুনীদের সংসদ সদস্য বানান। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে সামরিক শাসকেরা লালন করেছেন বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের খুনিদের জিয়াউর রহমান পূনর্বাসন করেছিলেন। এরশাদ তাদের দিয়ে ফ্রিডম পার্টি গঠন করেন। কর্নেল ফারুককে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করেন।শুধু তাই নয়, এসব সামরিক শাসকরা শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানান, আবদুল আলীমকে মন্ত্রী বানান। আবদুল মান্নানকে মন্ত্রী করা হয়, পরে উপদেষ্টা করা হয়।তিনি বলেন, অতীত শাসকদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে খালেদা জিয়া কর্নেল হুদা, কর্নেল রশীদকে ভোটারবিহীন নির্বাচনে নির্বাচিত করে আনেন। পরে স্বাধীনতাবিরোধী নিজামী-মুজাহিদের গাড়িতে ৩০ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা পতাকা তুলে দেন। খুনিদের মদদ দেওয়াই তাদের চরিত্র। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করাই তাদের কাজ।বর্তমান সরকারের আমলে নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত পর্যায়ে এসেছে, বিদ্যুতের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ২১ বছর পরে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের উদ্যোগ নেয়।তবে বিএনপি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন হরতাল আহবান করে।বিএনপি'র ষড়যন্ত্রের বিষয় জনগণকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতকে নিয়ে যুদ্ধাপরাধদের রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে।শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫'র পরে জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিয়েছেন এবং বেগম জিয়া ও একই নীতি গ্রহণ করেছেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন। 
বিএনপি একাধিকবার ক্ষমতায় এসেছে। তিনি প্রশ্ন করেন- হত্যা, দুর্নীতি ছাড়া তারা দেশকে কি দিয়েছেন। তারা কালো টাকা পুঞ্জিভূত করে নিজেদের ভাগ্য গড়েছেন। তিনি বলেন, তারা ২১ আগস্টের বোমা হামলা, একই সময়ে ৫শ' স্থানে সিরিজ বোমা হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী এসএএমএস কিবরিয়া ও আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপিকে হত্যা এবং ১০ ট্রাক গোলাবারুদ আমদানির সঙ্গে জড়িত ছিল।প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারেক জিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যাংক থেকে ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণের সুদ প্রদান থেকে অব্যাহতি নেন।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. নাসিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, ঢাবি ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও সানজিদা খানম এমপি।সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপি তার নিজস্ব শক্তি হারিয়ে জামায়াতের আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তিনি ১৯৭১ সালের মত সকল স্বাধীনতাপন্থী শক্তির ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন,
প্রগতিশীল শক্তির দৃঢ় ঐক্যই কেবল দেশকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ৫টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর একটি মহল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। তিনি আরো বলেন, কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ভবিষ্যতে কেউ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারবে না।সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের সময়ে বাংলাদেশে প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নে একটি মডেল হয়েছে। বিএনপি সকল অশুভ শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তিনি সকল অশুভ শক্তির মূলোৎপাটন করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনোই জনগণের কোন কিছু গোপন করেননি। তিনি দেশ পরিচালনার সময় জনগণের কাছে সব সময় তার সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেছেন। আমরা এমন আর কোন বিশ্ব নেতা পাইনি। ফলে সাধারণ জনগণ তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেনি। ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁকে খুন করেছে।তিনি আইসিটি আইন লংঘনকারী অভিযুক্ত একজন ব্যক্তির পক্ষে আদালতে যাওয়ায় কয়েকজন বিদেশী কূটনীতিকের সমালোচনা করে বলেন, এ সব দেশ তাদের নিজস্ব ভাষা ও স্বার্থে মানবাধিকারকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করায় বেগম জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, যখন সমগ্র জাতি জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ডে শোক পালন করছে সে সময় এ ধরনের ঘটনা সত্যি হাস্যকর।তিনি বলেন, একটি সভ্য সমাজে এ ধরনের ঘটনা সম্পূর্ণ অনৈতিক। তিনি বলেন, তারা আমাদের বিরুদ্ধে এখনো লড়াই করছে। তারা বঙ্গবন্ধুকে তার পরিবারের সদস্যসহ হত্যা করেছে এবং এখন তারা শেখ হাসিনাকেও শেষ করে দিতে চায়।সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, যারা জাতীয় শোক দিবসে ভুয়া জন্মদিনের নামে কেক কেটে ফূর্তি করেন, তাদের সঙ্গে কোনো আপস, কোনো আলোচনা বা সংলাপ হবে না। তিনি বলেন, বিএনপি যুদ্ধ শুরু করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। তাদের সঙ্গে কোনো সমঝোতা বা সংলাপ হবে না। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার মা-বাবা, ভাই-বোন ও আমার পিতার হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আপস হবে না।নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন,
আমাদের সবাইকে তা একাগ্রচিত্তে মেনে নিতে হবে। নইলে আমার-আপনার কারোরই মঙ্গল হবে না।অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন বৈপ্লবিক নেতা। তিনি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে এ জন্য এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রকৃত কারণ ও ষড়যন্ত্রকারীদের সনাক্ত করতে একটি কমিশন গঠন করার আহ্বান জানান।মোহাম্মদ নাসিম ১৫ আগস্টে খালেদা জিয়ার জন্মদিনের নামে গতকাল কেক কাটার জন্য খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, একটি সরকার এক মেয়াদে তার সকল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারে না। তিনি দলের বাকি সকল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগকে আরো একবার ক্ষমতায় আসতে সুযোগ দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

Friday, July 26, 2013

Mukthir Graphics

তারেকই আমার মাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: সজীব ওয়াজেদ জয়
বাংলাদেশকে আমরা সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছি: সজীব ওয়াজেদ জয়
২৪ জুলাই ২০১৩, ৯ শ্রাবণ ১৪২০
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে হত্যা করতে চেয়েছিলেন বলে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে এমন তথ্য আছে দাবি করে তিনি আগামীতে বিএনপি-আওয়ামী লীগের দুর্নীতির তুলনামূলক বিচার করে জনগণকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। ইফতার মাহফিলে জয় স্পষ্ট ভাষায় বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের জনসভায় প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড মেরে আমার মাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমরা তা ভুলে যাইনি। বাংলার মানুষ তা ভুলে যায়নি। এর বিচার হবেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, চারদিকে শুধু সমালোচনা- আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করেছে কিন্তু আপনারা তুলনা করে দেখুন বিএনপি সরকারের আমলে দেশ ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে দুর্নীতি অনেক কমেছে। দেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়নি।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, গত চার বছর আওয়ামী লীগ কিভাবে দেশ চালিয়েছে আপনারা দেখেছেন। আপনারা দেখেছেন গত সাড়ে চার বছরে পুলিশ, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতে কোন ভবন সৃষ্টি হয়নি। এ সময় কোন ভবনকে চাঁদা দিতে হয়নি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সাড়ে চার বছর থেকে মানুষের সেবায় কাজ করছে। এক মাত্র আওয়ামী লীগ দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়েছে। যত উন্নতি হয়েছে তা আওয়ামী লীগ আমলে হয়েছে। ঢাকায় ফ্লাইওভার হয়েছে, হাতিরঝিল প্রকল্প হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। দেশের অর্থনীতি দ্রুত সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির সমালোচনা করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বিএনপি হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে চাঁদাবাজি করেছে। তাদের আমলে শুধু খাম্বা হয়েছে, ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে মানুষ আজ শান্তিতে ইফতার করতে পারছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ সমস্যা নেই, লোডশেডিংয়ের ভয় নেই। বিএনপির দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, আজকে হলমার্ক, ডেসটিনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিএনপি আমলে কখনও ব্যবস্থা নেয়া হতো না। দ্রব্যমূল্য সম্পর্কে জয় বলেন, আজকে মানুষ শান্তিতে ইফতার করতে পারছে। তারা খাবার কিনতে পারছে। অথচ বিএনপি আমলে চাল-ডালের দাম এমনভাবে বাড়ত মানুষ এগুলো কিনতে পারত না। দেশ সন্ত্রাস নরৈাজ্য থেকে মুক্তি পেয়েছে বলেও অভিমত প্রকাশ করেন তিনি। জয় বলেন, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমরা আবার কালো দিনে ফিরে যাব। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ফিরে আসবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ১০/১৫ বছরে দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, 'সামনে নির্বাচন, অনেকে ভয়ে আছেন আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে কি না? আমার কাছে তথ্য আছে, আগামীতে আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় আসবে। আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের চেহারা বদলে দেবে।